রবিবার, ১ আগস্ট, ২০১০

কান্না

দুটি চোখ কথা বলছিল নিরবে,
অবুঝ দুটি চোখ ...
ফোলা ফোলা গাল বেয়ে
অঝরে ঝরছিল মুক্তোর দানার মতন
চিকচিকে ক'ফোটা জল।

তোমার বোবা কান্না আমাকে নির্বাক করে দেয়,
প্রচন্ড অভিমানী ঐ মুখশ্রী
বার বার আমার বুকে আঘাত হানে,
ক্ষত বিক্ষত এই আমার হৃদয়
ভালবাসার আকুতি নিয়ে অনুনয় করলাম,
তুমি বোবা কথামালায় আমাকে ফিরিয়ে দিলে।

বেদনার অশ্রুতে লাল ও দুটি চোখ
যেন রক্ত জবা ফুল,
ভুল করা মন প্রার্থনায় বিনত
কিন্তু অভিমানী তোমার মন
প্রতিবাদী নিশ্চুপ ভাষায় অবহেলা করে গেলে।

তোমার সে উপহার
নিলাম তোমার বুকে মাথা পেতে,
দুজনার নীল কষ্ট নোনাজলে মাখামাখি,
তবু, ভালবাসার অহংবোধ
কাউকে নত হতে দিল না।

বুঝলে কিনা জানি না তখন,
ভালবেসে চলে গেলে উজাড় করে দিয়ে
কান্নায় ভাসিয়ে, শুন্যতা ভরিয়ে দিলে।

মঙ্গলবার, ৮ জুন, ২০১০

আশা-নিরাশা

কদিন যে চেয়েছিল চিরকালের সাথি হতে
বহু দূরে চলে গেছে বিরহের গান গেয়ে,
সাত সমূদ্র তেরো নদী ওপারে
যে ছিল আমার ভালবাসা।

জানি, কখনও আসবে না সে ফিরে
কান্নার ফোঁটা বৃষ্টির পানি হয়ে ঝরে,
মিশে যায় নিঃশব্দে এ বুকের মাঝখানে
চোখ হয়ে ওঠে ঝাপসা।

মৃদু আলো ভেসে আসার আভাস পেয়ে
চঞ্চল মন নেচে ওঠে নুপূরের নিক্কনে,
অজানা আশায়, সে বুঝি এলো ফিরে
হাতে নিয়ে একগুচ্ছ রজনীগন্ধা।

বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০১০

অনিশ্চয়তার মায়াজাল

মেনে নিতে হচ্ছে মুখ বুঁজে সব কিছুই
মেনে নিতে হচ্ছে সব যন্ত্রনা
দুঃখ বেদনা যত,
অম্লান বদনে মাথা পেতে নিতে হচ্ছে
সমস্ত পাপের প্রতিফল।

জানি না সে কোন পাপ কুঁড়ে কুঁড়ে

খাচ্ছে আমায় প্রতিনিয়ত,
টুকরো টুকরো করে দিচ্ছে এই হৃদয়টাকে
আঁচড়ে কামড়ে ছিন্ন ভিন্ন করে দিচ্ছে মন।

একি ভালোবাসার পাপ?

তোমাকে আমার করে চাইবার পাপ?

তোমাকে চাওয়া যদি পাপই হতো

তবে সে মুহুর্তে আমি
তলিয়ে যেতাম অতল গহবরে।
তোমাকে ভালোবাসা যদি অন্যায় হতো
তবে সে মুহুর্তে আমি
ধ্বংস হয়ে যেতাম তোমাতেই।

জানি না এ কোন ভুলের মাশুল

প্রতিক্ষনে জীবনে কম্পন তুলে যায়,
হৃদয়ের বাঁকে বাঁকে
কালবোশেখীর ঝড় ছোবল দিয়ে যায়।

জানি না এ কোন অনিশ্চয়তার মায়াজাল

আমায় করেছে বন্দী,
হয়ত ছিন্ন হবে কোনোদিন
হয়তবা ছিড়বে না কখনোই।


 

শুধু তুমি

মার প্রতিটি ভোর জেগে উঠে নূপুরের নিক্কনে
আমার দূপুর কাটে বিষন্ন নির্জনতায়
আমার একাকী প্রহর জুড়ে আছে ভ্রমরের গুঞ্জন,
বুকের ভেতরে তীব্র যন্ত্রনা
আমাকে কষ্ট দেয়, আর্তনাদ করে ওঠে ...
তবু তোমারই আশায়
পথ চেয়ে রই সারা বেলা
মনের মাঝে বয়ে চলে দমকা হাওয়া
দমিয়ে রাখতে পারি না তাকে ...


হৃদয়ের গভীরে বারে বারে
বেজে ওঠে তোমারই কন্ঠস্বর
নিরবে চোখের জলে ভাসে এই বুক
তবু এ হৃদয়,
মনে প্রানে খুঁজে ফেরে
শুধু একজনকেই ...


সে তুমি, তুমি ছাড়া আর কেউ তো নয়
আমার জীবনের সাধনায় তুমি
রাতের নিশ্চুপতায় খুঁজে ফিরি তোমায়
তবু দেখা মেলে না ...


হে নিষ্ঠুর ভাগ্য! এমন কেন হয়,
এ মন কেন পেতে চায় শুধুই তোমায় ...

 

বাদল দিনে

বাদল দিনে মনে পড়ে
তোমার আমার গান,
গলা ছেড়ে গেয়ে উঠি
খুলে মোদের প্রান।

মনের কোনে উঁকি দিল

বাদল ধারার জল,
উছলে ওঠে জীবন বাঁকে
চল্ রে সথে চল্।

হৃদয় বীণায় সুর বাঁজে

গগন জোড়া নৃত্য,
ইচ্ছে করে নেচে উঠি
বরষায় হয়ে সিক্ত।

মেঘের অমন কান্না আজি

আঁধার কালো ধরণী,
মাটির বুকে জলের খেলা
বাদল রাঙা বরণী।

দু'হাত মেলে হৃদয় খুলে

করি বরষা যাপন,
বাদল দিনে তাইতো বলি
তুমিযে মোর আপন।

যে চিঠি লেখা হয়নি কোনদিন

কেমন আছো তুমি? ভাল আছো তো।
বহুদিন ধরে ভাবছি কেবল
কি লিখি তোমায়, কেমন করে লিখি।
কত কথা জমে আছে মনের আঙিনায়
আবার ভাবি, দূর ছাই!
এ কথা লিখব কি করে
মনের খাতার কথাগুলো এলোমেলো করে দেই
নতুন করে লিখতে বসি সাদা কাগজে।


কলম থেমে যায়, ক্ষানিক এগুতেই
ভাবনার নৌকোরা কূল খুঁজে ফেরে
কিন্তু কিনারা মেলে না কিছুতেই
কেমন আছো তুমি? ভাল আছো তো।


জানো, কদিন ধরে মন ভাল নাই
শুধুকি মন, কিছুই ভাল নেই
হৃদয়ের ভেতরটা ছটফট করে শুধু
তোমায় খোঁজে, শুধু তোমায়।
কি করে বলি এসব
চিঠিতে কি এমন করে বলা যায়?
যদি তুমি থাকতে পাশে
বলতাম তোমার কানে কানে,
ফিসফিসিয়ে সে কথা শুনতে তুমি
আর হাসতে মিটিমিটি।
তোমার হাসিতে
লজ্জায় টুকটুকে হত আমার মুখখানি,
কি করে বলি তোমায়
বোঝ না তুমি?


কেমন আছো তুমি? ভাল আছো তো।
এত যে ডাকি তোমায়
অন্তরে অন্তরে, বুকের গভীরে
শুনতে কি পাও তুমি?
তোমার অস্তিত্ব আমার শরীর জুড়ে
বুঝতে কি পারো তুমি?
কাছে এসে একটু ছুঁয়ে দিতে যদি
আমার এই দেহ অধীর হয়ে আছে
পথ চেয়ে আছে কেবল তোমার জন্যে।
দিন কাটে রাত কাটে, পাখিরা কথা কয় মোর সাথে
শুধু তুমি নেই। কেন নেই তুমি কাছে?


কোথায় আছো, কেমন আছো তুমি?
ভালো আছো তো।
ঐ জগৎটাতে কি একা লাগে তোমার,
কষ্ট হলে খুব, একটা চিঠি দিয়ে দিও
দেখবে আমিও চলে এসেছি তোমার দেশে
সুখ ছেড়ে, সব মায়ার বাধঁন চিরে
তোমার বুকে করব বসবাস।


এখন আর লিখে কি হবে,
মনের খাতা ছিড়ে কুটিকুটি করি
আজ তাই চিঠিকে দিলাম ছুটি।।

 

শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে


দীর ওপারে নীল আকাশ। এপারে নদীর কালো জল। একটা বড় ট্রলারের ধাক্কা জলকে আরো ঘোলা করে দিয়ে গেলো। আমার শাড়ীর কালো আচঁল নৌকা বেয়ে জলের সাথে খেলায় মেতে উঠেছিল। তুমি বললে, 'এই কি করছ, নোংরা জলে ওত মাখামাখি কেন?' আমি মুচকি হেসে এক মুঠো জল তোমার মুখে ছিটিয়ে দিলাম। তোমার সে কি অভিমান, আর আমার সে কি বাধঁ ভাঙা হাসি। আমার হাসিতে অবশেষে তোমার মন গলে মোম হল। তুমি আমায় কাছে টেনে নিতে নিতে বললে, 'অত দূরে কি ভাল লাগে?' আমি আবারো কিছু না বলে মাথা দুলিয়ে হাসলাম। এই হাসিটা তোমার খুব প্রিয় তাই না। আমার হাসি শোনার জন্য তুমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা কর তা আমি জানি। এজন্যই তো এত হাসি। তোমাকে অপেক্ষায় রাখতে আমার যে একটুও ভাল লাগে না।

সেদিন বিকেলটা বড় ভাল ছিল তাই না। নদীর ঢেউ আর বাঁধ ভাঙা ভালবাসা মিলে মিশে একাকার। তোমার বুকে মাথা রেখে গুনগুন করে গেয়ে উঠল মন। তোমার স্পর্শে আমি যেন বারে বারে ক্লান্তির পথ ভুলে ঘুমের দেশে তলিয়ে যাচ্ছিলাম। চোখ বুজলেও তুমি ছিলে আমারই সামনে, দেখছিলাম তোমাকে মন ভরে। আকাশ বাতাস যেন হিংসেয় জ্বলছিল আমাদের দেখে। তুমি মিটিমিটি হাসলে আর আমি বললাম, 'জ্বলুক না, পুরে ছাই হয়ে যাক'। আবারো সে কি হাসি তোমার। জানো, তোমার এই কাচ ভাঙা হাসি আমার ভীষন ভাল লাগে। বুকের মাঝে যেন ঝড় উঠে তোলপাড় করে দেয়। তুমি হাসলে মনে হয়, আমার আর কিছুই চাইবার নেই। সব পাওয়া হয়ে গেছে। তুমি একটু পর পর বলছিলে, 'শোনা, আজ তোমায় শাড়ীতে কি যে সুন্দর লাগছে!' আমি আবারও নিঃশব্দ হাসিতে ভেঙে পরলাম। মনে মনে বলি, 'সবই তো তোমার জন্য, বোঝ না তুমি?'

ধীরে ধীরে গোধুলি নামল আকাশ ছেয়ে, নদীর জলে সোনালি ছায়া। কালো জলের অমন স্বর্নালী রূপ আমি আগে দেখিনি। তুমি সাথে ছিলে বলেই হ্য়ত প্রকৃতির আজ এত সাজ। তুমি হঠাৎ ডেকে বললে, 'এই দেখ দেখ, কি দারুন চাঁদ'। আমি গেয়ে উঠলাম গুনগুন করে ...
" চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে উছলে পড়ে আলো,
ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধ সুধা ঢালো,
চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে ... "

প্রতিক্ষা


রাত্রিটা ভোর হলো,
অন্ধকারের ভয়াবহতা কেটে
নেমে এলো স্নিগ্ধ সকাল।
ধীরে ধীরে কাটবে বেলা
বিকেলের অপেক্ষায়, এই পৃথিবীর
কেটে যাবে সব দুঃখের জাল।

তোমারই অপেক্ষায়,
প্রতিক্ষার প্রহর গুনে গুনে
কাটিয়ে দিলাম বহুকাল।
এ হৃদয় এখনো নিস্তেজ হয়নি
মনের গভীর নদীতে, আজও
বয়ে চলেছে উদ্দাম নৌকোর পাল।

পথ চেয়ে বসে আছি,
জানি না কবে হবে সমাপ্তি
প্রতিক্ষার এ প্রহর।
মেঘে ঢাকা আকাশ, ছেয়ে যাবে
রূপালি জোছনার প্রেরনায়
ক্ষনিকের এ প্রেম হবে অমর।

পরিনীতা


জানালার শিকের ফাঁকে ফাঁকে
চুইয়ে পড়ছে জোছনার নম্রতা
রাতের ঘন আধাঁর হয়েছে ম্লান
ফুটে উঠেছে ধবল স্নিগ্ধতা।

বিছানায় এসে পড়েছে
একফালি চাঁদের ঝিকিমিকি ছায়া,
তার পাশে অপেক্ষামান আমি
নিশ্চুপ জেগে আছি,
জড়িয়ে আছে এ দেহ মন
সে এক অজানা মায়া।

রাত্রির নিরব প্রহরে
আমি আজ বড় একা
জেগে বসে, নেই এতটুকু ক্লান্তি
ঘুমে জড়িয়ে আসছে না দু'চোখ।

তবে সে কোন অদৃশ্য আকর্ষনে
উন্মিলিত এ চোখ চেয়ে রয়েছে অপলক।

তবু বসে আছি আজ
কাজল রাঙা চোখে, আমি অপেক্ষায়
রাত্রির প্রহরগুলো ধীরে ধীরে
হয়ে যাচ্ছে নিঃশেষ
জেগে আছি নিরব নিস্তব্ধতায়।

জীবন ছবি


অসীম থেকে আসা একটুকরো আলো
ঠিকরে এসে পড়েছে আমার জীবনে,
সে আলো কিসের আলো
জানি না তা।
প্রশ্ন করি নিজেকে
জবাব খুঁজে পাই না।

সে আলোর ছটায়
জীবন হলো স্নিগ্ধ
উত্তাল ঢেউয়ের বদলে
লাগল এসে মৃদু হাওয়ার পরশ।

মুখর হলো হৃদয়
কেটে গেলো তিমীর আঁধার
সূর্যদয়ে হলো জীবনের শুরু।

কেটে গেলো বহু বছর
তারপরও খুঁজে ফিরেছি
আরও কিছু।
কিন্তু কি তা জানি না
প্রশ্ন করি নিজেকেই
উত্তর মেলে না।

বেলা গড়িয়ে দুপুর হলো
রৌদ্রজ্বল সময়গুলো
যেন উড়ে যায় পাখির মত।

দিগন্তের শেষ সীমানা
ধেয়ে আসছে জীবনের দিকে,
আলোর শেষ প্রান্তে
জীবন যেন নদীর স্রোত
বাঁধ ভেঙে ছুটে যায় সাগরের বুকে।

তাই তো সে মহীয়ান
বিশাল বুকের ভেতর
সকল যন্ত্রনা শুষে নিয়ে
মুক্তি দিল আমায়।

কখনও সে গুমড়ে কাঁদে
তবু নেই কোন অভিযোগ
নিরব নিভৃতে কাটায় দিন।

গড়িয়ে গেলো সময়,
সূর্যাস্তের শেষ রাঙা আলোয়
কেঁদে উঠল মন, ছুঁয়ে দিল এ হৃদয়।
জীবন আঙিনার এই ক্ষনিক প্রেরনায়
ভরে গেলো বুক
অতৃপ্ত নিরব বাসনায়।

বন্দিনী


একাকী বন্দী পাখির মত
সোনার খাঁচায় বন্দী আমার প্রান,
দুবেলা খাবার পানি জোটে
জোটে অনেক সম্মান, কিন্তু
যতই কর আদর, যতই দাও প্রেম
বন্ধ হয়ে আসে আমার নিঃশ্বাস।

আদর করে আমায় কেউ
সোনার ময়না বলে ডাকে,
বুক ভরে সোহাগ করে
আমার আপনজন। তারপরও
লাগে না ক্ষুধা, লাগে না তৃষ্ণা
মন বসে না আমার কোন কাজে।

উড়ে যেতে পারি না ডানা মেলে
সুদূর অনন্ত অম্বরে,
খোলা আকাশে মেঘের দেশে
যে দেশে বসত করে
আমার আপনজন।
মন চায় ছুটে যেতে সেখানে,
যেখানে অপেক্ষায় আছে
আমার একান্ত প্রিয়জন।

সোনার খাঁচার বন্দিনী
মনের কথার গান গেয়ে যাই
গুনগুন করি সারাদিন সুরে,
আমার মাঝে নেই আমি আজ
ডুবে যাই অতল গহবরে।

বন্দী আমি স্তব্ধ আমি
সুখের খোঁজে পাখা ঝাপটিয়ে মরি,
সোনার খাঁচার সোনার আলোয়
ছটফট করি পিপাসায়, আর্তনাদ করি
তবু কেউ শুনতে পায় না
সোনার পালঙ্কে ঘুম আসে না
বড় কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছি।

ফিরে আসা


ফেরে না রঙিন দিন
ফেলে আসা হাসি,
ফেরে না মেলা থেকে কেনা
এক পয়সার বাঁশি।

ফিরে আসে না কভু
ভালোবাসা অমলিন,
ফিরে তো এলো না সেই
বৃষ্টি ভেজা দিন।

ফেরে না শ্রাবনের মেঘ
কাল বোশেখীর ঝড়,
ফিরবে কি কভু তুমি
যদি হয়ে যাও পর।

ফিরে তো আসবে না
এমন পদ্য লেখা,
ফিরবে না সেই স্মৃতি
যেদিন হলো মোদের দেখা।

ফেরে না পুরোনো কষ্ট
দুঃখ বেদনা যত,
সুখগুলোও ফিরে আসে না
যাতনারই মত।

ফিরবে না যদিও
তবু রয়ে যাবে সবই,
মনের এই আঙ্গিনায়
হঠাৎ দেবে উঁকি।

তুমি আর আমি


আমি এক পালতোলা নৌকো
তুমি যে সুনীল নদ
তোমার বুকের নীল জলে
ভেসে গেলো জনপদ।

তোমার উত্তাল ঢেউয়ের তালে
আমায় তুমি ভাসাও
তোমার ভালোবাসার কালো জলে
আমায় তুমি ডুবাও।

ও আমার ভালোবাসার নদ
আমার তুমি হবে কবে
মোহনার ঘূর্নিপাকে এসে
আমাদের মিলন কি হবে।

আমি আর তুমি মিলে
গড়ব নতুন সম্পদ
এ মাটির বুকে জন্ম নেবে
ভালোবাসার ছোট্ট নদ।

ঘুমিয়ে আছো তুমি


ঘুম ভেঙে জেগে দেখি
আমার পাশে তুমি নেই,
বিছানাটা পরে আছে অগোছালো
তোমার বালিশটা ঠিক তেমনি আছে
যেমনটি তুমি ঘুম থেকে ওঠার পর রেখে যাও।

নেমে দাড়াই এলোমেলো শাড়িতে
আচঁলটা টেনে ঠিক করে নিই
ভাবি, তুমি হয়ত এতক্ষনে গোসল সেরে নিয়েছ।
মনে মনে মুচকে হাসি,
একটা ভীষন ভাললাগার অনুভূতি
অন্তরে নাড়া দিয়ে যায়।

আজঁলা ভরা জলে
নিজেকে রাঙিয়ে দিয়ে মনটাকে তাজা করি
হঠাৎ মনে পড়ে যায়, আজ আবারো
ঘুম থেকে উঠতে দেরী হলো
তুমি নিশ্চয়ই নাস্তার অপেক্ষা করছ।

দৌড়ে ঢুকি রান্নাঘরে,
দ্রুত হাতে টিফিন রেডি করে
তোমার অপেক্ষায় বসি খাবার টেবিলে।
মনে মনে ভাবি, কাল থেকে তোমাকে
নিজ হাতে জাগাব বেড টি হাতে নিয়ে
ভেবে ভেবে ক্ষনিকের জন্য
ভালবাসায় মনটা আন্দোলিত হয়।

ইশ, এই অসময়ে টেলিফোন কার?
ধ্যাত, মেজাজটা খিচরে ওঠে
হ্যালো, ... ওপাশ থেকে আপার উদ্বিগ্ন কন্ঠস্বর
'কিরে তুই রেডি হয়েছিস, কখন থেকে কল করছি
শোন, হালকা আকাশী শাড়িটা পরে নিস
কথা বলছিস না কেনো রে
ভুলে গেছিস, আজ যে ১ম বার্ষিকী
সব আয়োজন আমি একা কি করে সামলাই'

হঠাৎ আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পরে
আমার দুনিয়াটা এক নিমেষে উজার হয়ে যায়
মনে পড়ে যায়
আজ এদিনে তুমি আমার ঘুম না ভাঙিয়ে
চলে যাও চিরতরে ...
বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে
কান্নায় ভারি হয়ে আসে দুচোখ
ভাবি, কাল থেকে নিজ হাতে
কি করে ঘুম ভাঙাবো তোমার,
তুমি যে ঘুমিয়ে আছো পরম শান্তিতে।

একাকীত্ব


আনমনে নিরবে
ভালবেসে কখন একাকার হয়ে গেছি,
অজান্তে যেন নিঃসাড় এদেহে
হয়েছিল প্রাণের সন্ঞার
বুঝতেও পারিনি ক্ষনিকের তরে।

জীবন নদীর মোহনায় মন ছুটে চলেছিল
উদ্দাম নৌকোর মত
সমূদ্রের সাথে মিলনের সময়ই যেন
বাঁধা দিল অদৃষ্ট নিয়তি,
ভাগ্যের কি বিরুপ পরিহাস
একাকীত্ব আমায় আজ দিচ্ছে নিমন্ত্রন।

অশ্রুধারা যেন সমুদ্রের ঢেউএর মত
আছড়ে পড়ে বারবার জীবন উপকূলে
বাধ ভাঙা শ্রোত যেন
অন্ধের মত শুধু ছুটেই চলে,
নিয়তির এ কঠিন নিয়ম
গুড়িয়ে দেবার ক্ষমতা আমার নেই।

এ দঃখ ভাগ করে নেবার কেউ নেই বলে
একাকী চলেছি আজ পথে পথে,
কারও সহানুভুতি, কারও এতটুকু স্বান্তনা
মনকে আরও অশান্ত করে তোলে।

ভালবাসাকে সঙ্গী করে নিয়েছি বলে
হয়তো আজ আমি এতোটা নিঃসঙ্গ,
আজ যেন আমি এক অঙ্গার
অনির্বান আমি,
শুধু জ্বলছি আর জ্বলছি
নিঃসঙ্গ জীবনটাকে চিরসঙ্গী করে।

... চোখ ভেসে যায় জলে ...


চোখ ভেসে যায় জলে আমার
জলের ছবি আকেঁ
কিছু কথা মনের কোনে
মন বলে নিরবে

কিছু ছন্দ ভেসে থাকে
কিছু থাকে মনে
কিছু ফুল চোখের তারায়
কিছু বৃন্দাবনে

কিছু দিন যায় না ভালো
রাত কাটে অনলে
কিছু কথা যায় না লেখা
রক্ত ঝরে কলমে

কিছু প্রেম হয় না অমর
কিছু থাকে বাকি
শকুন্তলা বলে ওঠে
জীবন ! সে কি ফাঁকি

চোখ ভেসে যায় জলে আমার
মনটা কেঁদে ওঠে
চোখ ভেসে যাএ জলে ...
... ... ভালবাসি বলে !

মেঘ রং


আকাশের এত মেঘ এত রং
এ কোন রং এর খেলা .. ..
ভাসিয়ে দিলাম তোমার আকাশে
আমার মনের ভেলা .. ..